বিএনপির শীর্ষ পদে পরিবর্তনের সুর!  


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০১৯, ০৯:২৩ এএম
বিএনপির শীর্ষ পদে পরিবর্তনের সুর!  

ঢাকা: দলের সভানেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যাওয়ার পর গভীর সঙ্কটে পড়া বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে সুদিনে ফেরার স্বপ্ন দেখলেও নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবির পর দলটির নেতা কর্মীরা এখন দিশা হারানোর দশা।  জাতীয় নির্বাচনে এমন ভরাডুবিকে এখনো অবিশ্বাস্য মনে করছেন দলটির নীতিনির্ধারণী নেতারা। যদিও নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে নির্বাচনে বিপর্যয়ের নেপথ্যে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগের পাশাপাশি নিজেদের ভুল ও দুর্বলতা নিয়েও নানামুখী হিসাব-নিকাশ কষছে বিএনপি।

ইতিমধ্যেই দল পুনর্গঠনের দাবি উঠেছে বিএনপিতে। মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন চাইছেন দলের নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের পর আমাদের নেতাকর্মীদের হতাশা তৈরি হয়েছে, দল বিপর্যস্ত। এসবের দায় দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির নেতারা এড়াতে পারেন না। তাছাড়া শোনা যাচ্ছে, মহাসচিব সংসদে যোগ দেয়ার জন্য বিদেশি কূটনীতিকদের মাধ্যমে তারেক রহমানের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন। কেউ বা তাদের ব্যবসা ধরে রাখার ফায়দা আঁটছেন। সার্বিক বিষয় বিবেচনা রেখে দল পুনর্গঠন হওয়া দরকার। তবে অসম্মানজনকভাবে কাউকে বিদায় দেয়া উচিত হবে না। আগামী মার্চে কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে চলেছে। আগামী জুন-জুলাইতে কাউন্সিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উপায়ে এসব পরিবর্তন আনলে দলকে গতিশীল করা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ব রাজনীতিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বয়স্করা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন-সেটা বিবেচনায় রেখে নীতি নির্ধারণী ফোরাম, দলের মুখপাত্র, দফতর, চেয়ারপারসনের কার্যালয় সর্বত্র পুনর্গঠন হওয়া উচিত।

দল পুনর্গঠন প্রসঙ্গে স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান বলেন, হ্যাঁ, দল পুনর্গঠন হওয়া উচিত। আমিও তাই মনে করি। আমি মনে করি, একেবারে গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে গ্রাসরুট থেকে টপ পর্যন্ত যাদের জনসম্পৃক্ততা আছে তাদের নিয়ে পুনর্গঠন হওয়া উচিত। কারণ জনসম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসঙ্গত, বিএনপির প্রথম কাউন্সিল হয় ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা বটমূলের খোলা চত্বরে। ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী হন প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব। দ্বিতীয় কাউন্সিল হয় ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি। সেই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব হন যথাক্রমে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার ও ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ১৯৮৯ সালের ৮ ও ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দলটির তৃতীয় কাউন্সিল। সেই কাউন্সিলে খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন এবং সালাম তালুকদার মহাসচিব হন। ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে চতুর্থ কাউন্সিলে খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন এবং আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া মহাসচিব হন। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর পঞ্চম কাউন্সিলে খালেদা জিয়া চেয়ারপরসন এবং খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন হন বিএনপির মহাসচিব।

সবশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আগামী মার্চে কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে চলেছে।

গো নিউজ২৪/এমআর

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর